বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

আঠারো শতকের শেষার্ধে ও উনিশ শতকের শুরুতে রাষ্ট্রিক, আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া সাহিত্যে দৃশ্যমান হয় এবং বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ এর সূচনা ঘটে। পাশ্চাত্য শিক্ষা, সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রভৃতির সংস্পর্শে এসে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল আধুনিক যুগে।

এ যুগের প্রতিভূ হলো গদ্য সাহিত্য। প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের বিষয় ছিল ধর্ম অথবা রাজবন্দনা আর আঙ্গিকে ছিল কেবলই কবিতা। কিন্তু আধুনিক যুগে গদ্যের বিকাশের সাথে সাথে বাংলা সাহিত্যের নব নব শাখা বিস্তৃত হলো এ সময়ে মানবতাবোধ, যুক্তিবাদ, সমাজসচেতনতা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, গদ্যের প্রতিষ্ঠা, স্বদেশপ্রেম, রোমান্টিক দৃষ্টি প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য সাহিত্যে মূর্ত হয়ে উঠে।

প্র.বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের বৈশিষ্ট্য কী?

উ. আত্মচেতনা, জাতীয়তাবোধ ও মানবতার জয়জয়কার ।

প্র. বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ কবে শুরু হয়?

উ. ১৮০১- বর্তমান। প্রকৃতপক্ষে ১৮৬০ সালের দিকে মাইকেল মধুসূদনের আবির্ভাবের মাধ্যমে আধুনিক যুগ শুরু হয় ।

প্র. বাংলা সাহিত্যে গদ্যের সূচনা হয় কবে?

উ. উনিশ শতকে। ড. সুকুমার সেন বাংলা গদ্য সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশ কালকে ৪ ভাগে ভাগ করেছেন। যথাঃ

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ
প্রথম স্তরসূচনা- ষোড়শ শতাব্দী থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
দ্বিতীয় স্তরউন্মেষ- ১৮০০ (শ্রীরামপুর মিশন) থেকে ১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
তৃতীয় স্তরঅভ্যুদয়- ১৮৪৭ (বিদ্যাসাগর) থেকে ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
চতুর্থ স্তরপরিণতি- ১৮৬৫ (বঙ্কিমচন্দ্র) থেকে বর্তমান……..
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ এ গদ্যের সূচনা হয় কবে

প্র. বাংলা গদ্যসাহিত্যের প্রাথমিক নিদর্শন কোনটি?

উ. ১৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দে আসামের রাজাকে কোচবিহারের রাজার একটি পত্রকে প্রাথমিক নিদর্শন ধরা হয়।

প্র. বাংলা গদ্যসাহিত্যের প্রাথমিক প্রচেষ্টা কোনটি?

উ. ১৭৪৩ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে প্রকাশিত ঢাকার ভূষনার জমিদারপুত্র দোম অ্যান্টনিও রচিত ‘ব্রাহ্মণ রোমান ক্যাথলিক সংবাদ’। এটি বাঙালির লেখা প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ ।

প্র. বাংলা কথ্য ভাষার আদি গ্রন্থ কোনটি?

উ. মনোএল দা আসসুম্পসাঁওয়ের রোমান লিপিতে লেখা ‘কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ’। তাঁর রচিত অন্য বইটি হলো ‘ভোকাবুলারিও এম ইদিওমা বেনগোল্লা ই পোরর্তুগিজ (১৭৪৩)।

প্র. বাংলা ভাষায় মুদ্রিত প্রথম গদ্যগ্রন্থ কোনটি?

উ. ১৮০০ সালে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে মুদ্রিত মথি রচিত ‘মিশন সমাচার’।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ

বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাংলায় কর্মরত ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্রিটিশ অফিসারদের দেশিয় ভাষা শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে লর্ড ওয়েলেসলি কর্তৃক ৪ মে, ১৮০০ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে বাংলা বিভাগ চালু হয় ২৪ নভেম্বর, ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে।

বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রি এবং বাইবেলের অনুবাদক বাংলায় অভিজ্ঞ উইলিয়াম কেরী। ১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে এ কলেজের গুরুত্ব হ্রাস পায়। রাজা রামমোহন রায়ের সাহিত্যিক প্রভাবে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের মহিমা ধীরে ধীরে বিলীয়মান হয় এবং ১৮৫৪ সালে লর্ড ডালহৌসির সময়ে কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কলেজটির নাম ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কেন? [২৮/২৭/১৮তম বিসিএস লিখিত]

উ. বাংলায় কর্মরত ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্রিটিশ অফিসারদের দেশিয় ভাষা শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে লর্ড ওয়েলেসৃলি কর্তৃক ৪ মে, ১৮০০ সালে কলকাতার লালবাজারে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে বাংলা বিভাগ চালু হয় ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কমপ্লেক্সের নামকরণ করা হয়েছে ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের নামে। আর এ কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে এর নাম হয় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ।

প্র. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগ চালুর মূল উদ্দেশ্য কী?

উ. বাংলায় কর্মরত ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্রিটিশ অফিসারদের বাংলা শিক্ষা দেয়া।

প্র. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে বন্ধ হয়?

উ. ১৮৫৪ সালে । (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. এ কলেজে বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে কে যোগ দেন?

উ. শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রী ও বাইবেলের অনুবাদক উইলিয়াম কেরী। বাংলা গদ্য বিকাশের যুগে ১৮০১-১৮১৫ সাল পর্যন্ত মোট ৮ জন লেখক ১৩টি বাংলা গদ্য পুস্তক রচনা করেছিলেন। এ ৮ জনের অধিকাংশই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

প্র. উইলিয়াম কেরী কী কী গ্রন্থ রচনা করেন?

উ. ‘কথোপকথন’ (১৮০১): এটি বাংলা ভাষার কথ্যরীতির প্রথম নিদর্শন। ‘ইতিহাসমালা’ (১৮১২): এটি বাংলা ভাষার প্রথম গল্পগ্রন্থ। ‘এ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ’ (১৮০১)।

প্র. কেরী সাহেবের মুন্সি কাকে বলা হতো?

উ. রামরাম বসু। কারণ, তিনি ১৭৯৩-১৭৯৬ পর্যন্ত উইলিয়াম কেরীকে বাংলা শেখান ।

প্র. রামরাম বসুর সাহিত্যকর্মসমূহ কী কী?

‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ (১৮০১): এটি বাঙালির লেখা বাংলা অক্ষরে প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ। বাংলা গদ্যে প্রথম জীবনচরিত। ‘লিপিমালা’ (১৮০২): এটি প্রথম বাংলা পত্রসাহিত্য।

Visit Our Official YouTube Channel “Sopner BCS” বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

শ্রীরামপুর মিশন ও বাংলা ছাপাখানা

শ্রীরামপুর মিশন ভারতে খ্রিষ্টানদের নিজস্ব প্রথম প্রচার সংঘ। ১৭৯৩ সালে উইলিয়াম কেরী খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলায় আসেন। তিনি উইলিয়াম ওয়ার্ড ও জোশুয়া মার্শম্যানের সহায়তায় ডেনমার্কের শাসনাধীন পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুরে ১০ জানুয়ারি, ১৮০০ সালে ‘শ্রীরামপুর মিশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

ঐ বছরের মার্চ মাসে শ্রীরামপুর মিশনের প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮০৮ সালে মিশনের মালিকানা ডেনিশদের হাত থেকে ইংরেজদের হাতে চলে যায়। শ্রীরামপুর মিশন থেকে পরবর্তীতে ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’ সহ একাধিক পুস্তক প্রকাশিত হয়। ১৮১৮ সালে এ মিশন থেকে ‘দিকদর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পন’ নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১৮৪৫ সালে শ্রীরামপুর মিশন বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু এ প্রেস ১৮৫৫ সাল পর্যন্ত চালু ছিল।

১৭৭৭ সালে জেমস্ হিকি নামের একজন ভাগ্যান্বেষী প্রথম কাঠের প্রেস তৈরি করে বাংলায় মুদ্রণ ব্যবসা চালু করেন। ওয়ারেন হেস্টিংস এর অনুরোধে ব্রাসি হ্যালহেড বাংলা ব্যাকরণের বই লিখার পর ছাপার যন্ত্র বা বাংলা মুদ্রণ হরফ না থাকায় হেস্টিংস তাঁর অধীনস্ত কর্মচারী চার্লস উইলকিন্সকে হরফ তৈরির নির্দেশ দেন।

উইলকিন্স পরে পঞ্চানন কর্মকারের সহায়তায় বাংলা মুদ্রণ হরফ তৈরি করেন। ইংরেজরা ছাপাখানা তৈরি করেছিলেন প্রথমত ইংরেজ কর্মচারীদের বাংলা শেখানোর বই ও অভিধান প্রকাশ এবং দ্বিতীয়ত বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশের জন্য । (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. ভারতীয় উপমহাদেশে কবে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়?

উ. ১৪৯৮ সালে গোয়ায় (এটি ছিলো পর্তুগিজ ভাষার মুদ্রণযন্ত্র)।

প্র. কে, কবে ও কোথায় প্রথম বাংলা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত করেন?

উ. ১৭৭৮ সালে চার্লস উইলকিন্স হুগলিতে প্রথম বাংলা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি নিজেই বাংলা অক্ষরের নকশা তৈরি করেন বলে তাঁকে বাংলা মুদ্রাক্ষরের জনক বলা হয়।

প্র. কে বাংলা অক্ষর খোদাই করেন?

উ. পঞ্চানন কর্মকার। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. বাংলা মুদ্রণ যন্ত্র কবে আবিষ্কৃত হয়?

উ. ১৮০০ সালে উইলিয়াম কেরী জোশুয়া মার্সম্যানের সহযোগিতায় শ্রীরামপুর মিশনে মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপন করেন।

প্র. শ্রীরামপুর মিশন থেকে কী কী প্রকাশিত হয়?

উ. গ্রন্থ : ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’ ইত্যাদি।

পত্রিকা: ‘দিকদর্শন’, ‘সমাচার দর্পণ’ প্রভৃতি।

প্র. বাংলাদেশে কবে ও কোথায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়?

উ. ১৮৪৭ সালে রংপুরে ‘বার্তাবহ যন্ত্র’ নামে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ।

প্র. ঢাকায় কবে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়?

উ. বাংলা প্রেস- ১৮৬০। এখান থেকেই দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ প্রকাশিত হয় ।

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি

১৮৬০ সালের সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের অধীনে নিবন্ধিত একটি অরাজনৈতিক, বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থা বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। এটি এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ে গবেষণার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কবে ও কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?

উ. ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায়। ভারত বিভাগের পর ৩ জানুয়ারি, ১৯৫২ সালে এর নামকরণ হয় ‘পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটি’। স্বাধীনতার পর নামকরণ হয় ‘বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি’।

প্র. এশিয়াটিক সোসাইটি কে প্রতিষ্ঠা করেন?

উ. স্যার উইলিয়াম জোন্স। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির মূল উদ্দেশ্য কী?

উ. অতীতকাল হতে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, দর্শন, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ের গবেষণামূলক জ্ঞান উপস্থাপন করা।

প্র. বাংলাপিডিয়া কবে প্রকাশিত হয়?

উ. ১৪ খণ্ডে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির উদ্যোগে প্রকাশিত হয় ।

প্র. বাংলাপিডিয়া’র প্রধান সম্পাদক কে?

উ. অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম । (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?

উ. সভাপতি: আবদুল হামিদ (১৯৫২-৫৩)।

সাধারণ সম্পাদক: ড. আহমদ হাসান দানী (১৯৫২-৫৩)।

প্র. বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি’র বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে?

উ. সভাপতি: অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী

সাধারণ সম্পাদক: অধ্যাপক আহমেদ, এ জামাল

সম্পাদক: অধ্যাপক এ. কে. এম গোলাম রব্বানী

বাংলা একাডেমি

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং এদেশের মুসলিম মধ্যবিত্তের জাগরণ ও আত্মপরিচয় বিকাশের প্রেরণায় বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ শতকের প্রথমদিকে বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ সূচিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানরা ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষা-দীক্ষায় অনগ্রসর । (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

এ অবস্থা অতিক্রম করার প্রয়াসে লেখক-পণ্ডিত-গবেষকদের দৃষ্টি পড়ে বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি। ১৯২৫ সালে কলকাতায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার গবেষণা ও সাহিত্যচর্চার প্রস্তাব করেন। বিভাগোত্তরকালে ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে মূল সভাপতির অভিভাষণে শহীদুল্লাহ একটি একাডেমি গড়ার কথা বলেন ।

পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির গবেষণা ও চর্চার কেন্দ্ররূপে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি আরও জোরালো হয়। অবশেষে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বর্ধমান হাউসে (স্থাপিত- ১৯০৬) বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয় যা উদ্বোধন করেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার।

প্র. বাংলা ভাষা বিষয়ক বৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোনটি?

উ. বাংলা একাডেমি। এটি ৪টি বিভাগ নিয়ে গঠিত। এটিকে বলা হয় ‘জাতির মননের প্রতীক’

প্র. বাংলা একাডেমি কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উ. ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ৩ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ সালে। বাংলা একাডেমি শব্দের বানান ‘একাডেমী’ থেকে ‘একাডেমি’তে রূপান্তরিত হয় ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ।

প্র. কোন আইনে বাংলা একাডেমি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায় ?

উ. The Bengali Academy Act- 19572

প্র. বাংলা একাডেমি ভবনের পুরাতন নাম কী?

উ. বর্ধমান হাউস। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ কবে চালু হয়?

উ. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৬০ সাল থেকে ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ চালু করা হয়। প্র. বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত পত্রিকা কয়টি? উ. ৬টি।

প্র. বাংলা একাডেমি’র বানান অভিধানের সম্পাদক কে?

উ. জামিল চৌধুরী

বাংলা একাডেমি’র পত্রিকার নামপত্রিকার বিষয়
বাংলা একাডেমি পত্রিকা (ত্রৈমাসিক)গবেষণামূলক
উত্তরাধিকার (মাসিক)সৃজনশীল সাহিত্য
ধান শালিকের দেশ (ত্রৈমাসিক)কিশোর সাহিত্য
বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা (ষান্মাষিক)বিজ্ঞান বিষয়ক
বার্তা (মাসিক)মুখপত্র
প্রথম সভাপতিমওলানা আকরম খাঁ
প্রথম পরিচালকড. মোহাম্মদ এনামুল হক
প্রথম মহাপরিচালকড. মাযহারুল ইসলাম
প্রথম মহিলা মহাপরিচালকড. নীলিমা ইব্রাহিম
বর্তমান সভাপতিসেলিনা হোসেন
বাংলা একাডেমি জার্নাল (ষাণ্মাষিক)
বর্তমান মহাপরিচালকমুহাম্মদ নুরুল হুদা
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

মধ্যযুগের জীবনী সাহিত্য,লোকসাহিত্য ও নাথ, মর্সিয়া সাহিত্য সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন।

উপন্যাস

উপন্যাস সাহিত্যতত্ত্বের একটি পারিভাষিক শব্দ। উপন্যাস হচ্ছে সমষ্টিবদ্ধ মানুষের এমন একটি পূর্ণাঙ্গ গল্প যেখানে বিচিত্র সব চরিত্র স্বমূর্তিতে অঙ্কিত হয়ে প্রতীকীভাবে জীবনের এক গভীর সত্যের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। সমসাময়িক সমাজের রঙ্গরসাত্মক চিত্র বাংলা উপন্যাসের প্রাথমিক পর্যায়ে বিশেষ প্রাধান্য লাভ করেছিল।

প্র. কথা সাহিত্য কী?

উ. কথা সাহিত্য বলতে উপন্যাস ও ছোটগল্পকে বোঝায় । উপন্যাসে ব্যক্তি জীবনের বৃহত্তর পরিসরের পরিচয় রূপলাভ করে কিন্তু ছোটগল্পে কোনো চরিত্রের একটিমাত্র দিকের প্রতিফলন ঘটে। (বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ)

প্র. উপন্যাস কী?

উ. লেখকের জীবনদর্শন ও জীবনানুভূতিকে বাস্তবকাহিনী অবলম্বনে শিল্পকর্মে রূপায়ণই উপন্যাস। বাংলা উপন্যাস রচনার সূচনা হয় উনিশ শতকের প্রথমার্ধেই। যা ছিল সামাজিক কাহিনী নির্ভর।

প্র. কে প্রথম উপন্যাস রচনার প্রাথমিক প্রচেষ্টা চালান?

উ. ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৭৮৭-১৮৪৮)। তাঁর রচিত উপন্যাস- ‘কলিকাতা কমলালয়” (১৮২৩): এ গ্রন্থে তৎকালীন কলকাতার জীবন ও অনাচারের চিত্র রূপায়িত হয়েছে। এ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে কিভাবে কলকাতায় আসতে হয় এবং সেখানকার অলিগলি খুঁজে নিজের ভাগ্যের সন্ধান করতে হয় তারই সত্যকথন।

‘নববাবু বিলাস’ (১৮২৫): এ গ্রন্থে কলকাতার বাবু সমাজের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে ৷

‘নববিবি বিলাস’ (১৮৩২): এ গ্রন্থে রুচিহীন নীতিভ্রষ্টতার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। সেকালের বড় লোকেরা অনেকেই রক্ষিতা নিয়ে বাইরে রাত্রি যাপন করত। ফলে তাদের স্ত্রীদের যে পদস্খলন ও শোচনীয় পরিণতি হয়েছিল সেটাই এ গ্রন্থের বিষয় ৷

প্র. বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস কোনটি (অবাঙালি কর্তৃক)?

উ. হ্যানা ক্যাথরিন ম্যালেন্স রচিত ‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ’ (১৮৫২)। এটি The Last Day of the Week নামে ইংরেজি আখ্যানের ছায়াবলম্বনে রচিত। খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করায় ফুলমনির সুখ এবং যথার্থ খ্রিস্ট ধর্মাচরণ না করায় করুণার দুঃখভোগ, পরে মেম সাহেবের ঈশ্বর প্রেরিত সুপরামর্শে করুণার সুমতি ও সুখের মুখদর্শন এ গ্রন্থের মূল কাহিনী। এটি মূলত খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে রচিত হলেও এতে উপন্যাসের কিছু লক্ষণ দেখা যায় ।

প্র. বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস কোনটি (বাঙালি কর্তৃক)?

উ. প্যারীচাঁদ মিত্র (টেকচাঁদ ঠাকুর) কর্তৃক রচিত ‘আলালের ঘরের দুলাল’ (১৮৫৮)। এটি ইংরেজিতে ‘Spoiled Child’ নামে অনূদিত। এটি বাংলা ভাষার প্রথম উপন্যাস যা তিনি ‘টেকচাঁদ ঠাকুর’ নামে ১৮৫৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ‘মাসিক’ পত্রিকায় লিখতেন। এটি কথ্য ভাষায় লিখিত যা ‘আলালি ভাষা’ নামে পরিচিত।

প্র. বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস কোনটি?

উ. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫)। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস। ষোড়শ শতাব্দীর শেষ পর্যায়ে উড়িষ্যার অধিকার নিয়ে মোঘল ও পাঠানদের মধ্যে যে সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল, তারই পটভূমিকা এ উপন্যাসের উপজীব্য। দুর্গেশনন্দিনী অর্থ দূর্গ প্রধানের কন্যা। অন্যতম চরিত্র: আয়েশা, তিলোত্তমা

প্র. বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা ঔপন্যাসিক কে?

উ. স্বর্ণকুমারী দেবী (১৮৫৫-১৯৩২)। তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ‘দীপনির্বাণ’ (১৮৭৬)।

প্র. বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক কে?

উ. মীর মশাররফ হোসেন। তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ‘রত্নবতী’ (১৮৬৯)।

প্র. বাংলা সাহিত্যের ত্রয়ী উপন্যাসগুলো কী কী ?

উ. কোনো লেখার তিনটি সিরিজ বা তিনটি পার্ট থাকলে তাকে ত্রয়ী বলে। ইংরেজিতে একে বলে ট্রিলজি। এ তিনটি সিরিজে ধারাবাহিকতা থাকে। আবার প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ হিসেবে পাঠযোগ্য।

ঔপন্যাসিকত্রয়ী উপন্যাস
আবু জাফর শামসুদ্দীন‘ভাওয়ালগড়ের উপাখ্যান’ (১৯৬৩), পদ্মা মেঘনা যমুনা’ (১৯৭৪), সংকর সংকীর্তন’ (১৯৮০)।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়‘ধাত্রীদেবতা’ (১৯৩৯), ‘গণদেবতা’ (১৯৪২), ‘পঞ্চগ্রাম’ (১৯৪৩)।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘আনন্দমঠ’ (১৮৮২), ‘দেবী চৌধুরাণী’ (১৮৮৪), ‘সীতারাম’ (১৮৮৭)।
বিমল মিত্র শওকত আলী‘সাহেব বিবি গোলাম’ (১৯৫৩), ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ (১৯৬২), ‘একক দশক শতক’ (১৯৬৩)।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ (১৯৩৬), ‘শহরবাসের ইতিকথা’ (১৯৪৬), ‘ইতিকথার পরের কথা’ (১৯৫২)
প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘পাঁক’ (১৯২৬), ‘কুয়াশা’ (১৯৩০), ‘মিছিল’ (১৯৩৩)।
শওকত আলী‘দক্ষিণায়নের দিন’ (১৯৮৫), ‘কুলায় কালস্রোত’ (১৯৮৬), ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’ (১৯৮৬)।
হুমায়ূন আহমেদ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ (২০০৪), ‘মধ্যাহ্ন’ (২০০৮), ‘মাতাল হাওয়া’ (২০১০)।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়‘সেই সময়’ (১৯৮১), ‘পূর্ব-পশ্চিম’ (১৯৮৮), ‘প্রথম আলো’ (১৯৯৬)।
সমরেশ মজুমদার ‘উত্তরাধিকার’ (১৯৭৯), ‘কালবেলা’ (১৯৮৩), ‘কালপুরুষ’ (১৯৮৫)।
তাহমিমা আনাম‘এ গোল্ডেন এজ’ (২০০৭), ‘দ্য গুড মুসলিম’ (২০১১), ‘দ্য বোনস অব গ্রেস’ (২০১৬)।
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস

ঔপন্যাসিকউপন্যাস
প্যারীচাঁদ মিত্র‘আলালের ঘরের দুলাল’ (১৮৫৮): বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫): এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস। ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘মৃণালিনী’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, ‘ইন্দিরা’, ‘যুগলাঙ্গুরীয়’, ‘দেবী চৌধুরাণী’, ‘রাধারানী’, ‘সীতারাম’, ‘রজনী’, ‘চন্দ্রশেখর’, ‘আনন্দমঠ’, ‘রাজসিংহ’, ‘বিষবৃক্ষ’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর‘বৌঠাকুরানীর হাট’ (১৮৮৩): প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। ‘চোখের বালি’, ‘গোরা’, ‘ঘরে-বাইরে’, ‘যোগাযোগ’, ‘শেষের কবিতা’, ‘দুইবোন’, ‘চার অধ্যায়’, ‘মালঞ্চ’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘রাজর্ষি’, ‘নৌকাডুবি’।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘বড়দিদি’ (১৯০৭): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। ‘শ্রীকান্ত’ (১ম খণ্ড- ১৯১৭, ২য় খণ্ড- ১৯১৮, ৩য় খণ্ড- ১৯২৭, ৪র্থ খণ্ড- ১৯৩৩): এটি তাঁর আত্মজৈবনিক উপন্যাস ।
‘গৃহদাহ’, ‘পথের দাবী’, ‘পল্লীসমাজ’, ‘দেবদাস’, ‘চরিত্রহীন’, ‘নববিধান’, ‘দত্তা’, ‘দেনা পাওনা’, ‘পরিণীতা’, ‘বিরাজ বৌ’, ‘পণ্ডিত মশাই’, ‘শেষ প্রশ্ন’, ‘শেষের পরিচয়’।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পথের পাঁচালী’ (১৯২৯): এটি তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। ‘অপরাজিত’, ‘আরণ্যক’, ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’, ‘অনুবর্তন’, ‘দৃষ্টিপ্রদীপ’, ‘ইছামতি’, ‘অশনি সংকেত’, ‘দেবযান’।
কালীপ্রসন্ন সিংহ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’ (১৮৬২): এটি রম্য রচনা ।
রমেশচন্দ্র দত্ত‘বঙ্গবিজেতা’ (১৮৭৯), ‘মাধবীকঙ্কন’ (১৮৭৯), ‘জীবনপ্রভাত’ (১৮৭৯), জীবনসন্ধ্যা’ (১৮৭৯)। প্রথম দুটি উপন্যাসে তিনি সম্রাট আকবর কর্তৃক বাংলা বিজয়, তৃতীয়টিতে আকবরের বিরুদ্ধে রানা প্রতাপ সিংহের সংগ্রাম এবং চতুর্থটিতে শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠা শক্তির অভ্যুদয়ের কাহিনী বর্ণনা করেন। এ চারটি উপন্যাসই ছিল ঐতিহাসিক। চারটির বিষয়ই মোঘল আমলের ১০০ বছরের মধ্যেই ঘটিত। এ জন্য উপন্যাস চারটি একত্রে সংকলিত হয়েছে ‘শতবর্ষ’ নামে ৷
ইন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘কল্পতরু’ : এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ব্যঙ্গ উপন্যাস ।
ভূদেব মুখোপাধ্যায়‘ঐতিহাসিক উপন্যাস’ (১৮৫৭): বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক উপন্যাসের দ্বিতীয় নিদর্শন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী ‘রূপজালাল’ (১৮৭৬): এটি আত্মজীবনীমূলক রচনা ।
নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন‘আনোয়ারা’ (১৯১৪): এতে বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের পারিবারিক ও সামাজিক চিত্র ফুটে উঠেছে।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ‘জোহরা’ (১৯২৬): এতে তৎকালীন মুসলিম সমাজের নারীদের প্রতি অন্যায় ও অত্যাচারের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। কন্যার মতামত অগ্রাহ্য করে আত্নীয়-স্বজনেরা বিয়ে দিতে গিয়ে কন্যার জীবনে যে দুর্ভোগের সৃষ্টি করে তারই সার্থক রূপায়ণ এ উপন্যাস ।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ধাত্রীদেবতা’, ‘গণদেবতা’, ‘পঞ্চগ্রাম’, ‘একটি কালো মেয়ের কাহিনী’, ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’, ‘ছবি’, ‘অরণ্যবহ্নি’,‘ চৈতালি ঘূর্ণি’, ‘জলসাঘর’।
কাজী নজরুল ইসলাম‘বাঁধনহারা’ (১৯২৭): এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রোপন্যাস। ‘কুহেলিকা’, ‘মৃত্যুক্ষুধা’।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়‘জননী’ (১৯৩৫): এটি তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ।
‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘শহরতলী’, ‘অমৃতস্য পুত্রা’, ‘অহিংসা’, ‘আরোগ্য’, ‘দিবারাত্রির কাব্য’, ‘সোনার চেয়ে দামি’, ‘স্বাধীনতার স্বাদ’।
আনোয়ার পাশা ‘রাইফেল রোটি আওরাত’।
সেলিনা হোসেন‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’, ‘নিরন্তর ঘন্টাধ্বনি’।
শওকত ওসমান‘জননী’ (১৯৫৮): প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। ‘জাহান্নম হইতে বিদায়’, ‘দুই সৈনিক’, ‘নেকড়ে অরণ্য’, ‘জলাঙ্গী’, ‘বনি আদম’, ‘ক্রীতদাসের হাসি’, ‘সমাগম’, ‘চৌরসন্ধি’, ‘রাজা উপাখ্যান’, ‘পতঙ্গ পিঞ্জর’।
দিলারা হাসেম‘ঘর মন ও জানালা’, ‘আমলকীর মৌ’ ।
অন্নদাশঙ্কর রায় ‘সত্যাসত্য’: বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্যিক উপন্যাস যা ছয় খণ্ডে প্রকাশিত ।
শওকত আলী ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’, ‘কুলায় কালস্রোত’, ‘ওয়ারিশ’
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ

Check Also

চর্যাপদ

চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন

প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন চর্যাপদ। চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন অনেকেই এই প্রশ্ন টি করে থাকেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *