“শব্দ কাকে বলে ও শব্দ কত প্রকার কি কি” অধিক আলোচিত প্রশ্ন। মূলত, এক বা একাধিক ধ্বনির সমন্বয়ে তৈরি অর্থবোধক ধ্বনি বা ভাষা একককে বলা হয় শব্দ । অন্যভাবে বলা যায়, অর্থ আছে এমন ধ্বনি হলো শব্দ ।
শব্দ কাকে বলে ও শব্দ কত প্রকারঃ
- গঠন অনুসারে শব্দ ২ প্রকার । যথা : i. মৌলিক শব্দ ii. সাধিত শব্দ ।
- অর্থ অনুসারে ৩ প্রকার। যথাঃ i. যৌগিক শব্দ ii. রূঢ়ি শব্দ iii. যোগরূঢ় শব্দ।
- উৎপত্তি অনুসারে ৫ প্রকার। যথাঃ i. তৎসম ii. অর্ধ-তৎসম iii. তদ্ভব iv. দেশি v. বিদেশি
আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে ‘শব্দ’ ধারণাকে পরিহার করে গ্রহণ করা হয় ‘রূপ’ ধারণাটি । তাই ‘শব্দতত্ত্ব’ না বলে, বলা হয় ‘রূপতত্ত্ব’ ।
মৌলিক শব্দ কাকে বলে: যেসব শব্দকে বিশ্লেষণ করা যায় না বা ভেঙে আলাদা করা যায় না, সেগুলোকে মৌলিক শব্দ বলে । যেমন : গোলাপ, নাক, লাল, তিন ইত্যাদি । মৌলিক শব্দগুলোই হচ্ছে ভাষার মূল উপকরণ ।
সাধিত শব্দ কাকে বলে: যেসব শব্দকে বিশ্লেষণ করা হলে আলাদা অর্থবোধক শব্দ পাওয়া যায়, সেগুলোকে সাধিত শব্দ বলে । যেমন : চাঁদমুখ (চাঁদের মতো মুখ), নীলাকাশ (নীল যে আকাশ), ডুবুরি (ডুব্ + উরি), চলন্ত (চল্ + অন্ত), প্রশাসন (প্র + শাসন), গরমিল (গর + মিল) ইত্যাদি । সাধারণত একাধিক শব্দের সমাস হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে সাধিত শব্দ গঠিত হয় ।
অর্থ অনুসারে শব্দ কত প্রকার
i. যৌগিক শব্দ ii. রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ iii. যোগরূঢ় শব্দ
যৌগিক শব্দ কাকে বলে: যে সকল শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ একই রকম, সেগুলোকে যৌগিক শব্দ বলে । যেমন:
মূল শব্দ | ব্যুৎপত্তি | ব্যবহারিক অর্থ |
মিতালি | মিতা + আলি | মিতার ভাব বা বন্ধুত্ব |
গায়ক | গৈ + অক (অক) | গান করে যে |
কর্তব্য | কৃ + তব্য | যা করা উচিত |
বাবুয়ানা | বাবু + আনা | বাবুর ভাব |
মধুর | মধু + র | মধুর মতো মিষ্টি গুণযুক্ত |
দৌহিত্র | দুহিতা + ষ্ণ্য | কন্যার পুত্র, নাতি |
যৌগিক শব্দ মনে রাখার সহক টেকনিকঃ
সুকেশিনী মিতালী দৌহিত্র’র সঙ্গে চিকামারতে গিয়ে বাবুয়ানার ভাব দেখিয়ে কর্তব্যের প্রতি অবহেলা করে মঞ্চে বসে গায়কের মধুর কণ্ঠে গান শোনে ।
রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ কাকে বলে: প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে গঠিত যেসব শব্দ মূল শব্দের অর্থের অনুগামী না হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে । যেমন :
রূঢ় শব্দ | উৎপত্তি | রূঢ় অর্থ | প্রচলিত অর্থ |
হস্তী | হস্ত + ইন | হস্ত আছে যার | একটি পশুকে (হাতি) বোঝায় |
গবেষণা | গো + এষণা | গরু খোঁজা | ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা বোঝায় |
প্রবীণ | প্র + √বীণ + অ | প্রকৃষ্ট রূপে বীণা বাজাতে পারেন যিনি | ‘অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বয়স্ক ব্যক্তি’ অর্থে ব্যবহৃত হয় । |
সন্দেশ | সম্ + √দিশ্ + অ | মিষ্টান্ন বিশেষ | সংবাদ |
রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ মনে রাখার সহক টেকনিকঃ
মহাবীর নামে এক প্রবীণ মাথায় তৈল দিয়ে সন্দেশ মুখে নিয়ে মহাভারত গবেষণা করার জন্য হস্তীর পিঠে উঠে বাঁশি বাজাতে বাজাতে রওনা করলেন।
যোগরূঢ় শব্দ: সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরূঢ় শব্দ বলে । যেমন:
পঙ্কজ | পঙ্কে জন্মে যা (উপপদ তৎপুরুষ সমাস) । শৈবাল, শালুক, পদ্মফুল প্রভৃতি নানাবিধ উদ্ভিদ পঙ্কে জন্মে থাকে । কিন্তু ‘পঙ্কজ’ শব্দটি একমাত্র ‘পদ্মফুল’ অর্থেই ব্যবহৃত হয়। তাই ‘পঙ্কজ’ একটি যোগরূঢ় শব্দ । |
রাজপুত | ‘রাজার পুত্র’ অর্থ পরিত্যাগ করে যোগরূঢ় শব্দ হিসেবে অর্থ হয়েছে ‘জাতিবিশেষ’ । |
মহাযাত্রা | ‘মহাসমারোহে যাত্রা’ অর্থ পরিত্যাগ করে যোগরূঢ় শব্দরূপে অর্থ ‘মৃত্যু’ । |
জলধি | ‘জল ধারণ করে’ এমন অর্থ পরিত্যাগ করে একমাত্র ‘সমুদ্র’ অর্থেই ব্যবহৃত হয় । |
যোগরূঢ় শব্দ মনে রাখার সহক টেকনিকঃ
রাজপুত পঙ্কজ সরোজকে জানিয়ে দিলেন যে তিনি অন্ন ধ্বংস না করে মন্দির ছেড়ে বলদ নিয়ে জলধির দিকে মহাযাত্রা করবেন ।
উৎস অনুসারে শব্দ কত প্রকার
উৎস বা উৎপত্তি অনুসারে বাংলা শব্দ ৫ প্রকার । যথা : i. তৎসম শব্দ ii .অর্ধ-তৎসম শব্দ iii. তদ্ভব শব্দ iv. দেশি শব্দ v. বিদেশি শব্দ।
ড. মুহম্মদ এনামুল হক কর্তৃক নির্ণীত বাংলায় শব্দের অনুপাত:
শব্দের নাম | অনুপাত |
তৎসম শব্দ | ২৫ শতাংশ |
অর্ধ-তৎসম শব্দ | ৫ শতাংশ |
তদ্ভব শব্দ | ৬০ শতাংশ |
দেশি শব্দ | ২ শতাংশ |
বিদেশি শব্দ | ৮ শতাংশ |
তৎসম শব্দ কাকে বলে: যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ | অপরিবর্তিত রয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তৎসম শব্দ । তৎসম [তৎ (তার) + সম (সমান)] অর্থ : তার সমান । তৎসম একটি পারিভাষিক শব্দ ।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তৎসম শব্দের উদাহরণ
কন্দু | গ্রহ | নক্ষত্র | বৃক্ষ | লতা | ধর্ম |
উদ্গিরণ | ঘৃত | চর্ম | নিমন্ত্রণ | অন্ন | বস্ত্ৰ |
উৎসুক | স্রোত | সিংহ | মৎস | জীবন | মৃত্যু |
অর্বুদ | পুরুষ | নারী | জয় | গৃহ | জলদ |
তমসা | ভবন | চক্ষু | কর্ণ | ছাত্র | ব্যাঘ্র |
রাত্রি | বধূ | নদী | পর্বত | ভ্রাতা | ভগ্নী |
দর্শনীয় | হস্ত | হস্তী | মস্তক | পাত্র | নাসিকা |
দুর্গা | পদ | দম্ভ | ভূমিকা | সন্ধ্যা | পণ্ডিত |
নির্গমন | মূর্খ | জল | বায়ু | নৃত্য | মনুষ্য |
নির্ঘণ | সূর্য | চন্দ্ৰ | কন্যা | প্ৰশ্ন | বন্ধু |
প্রাজ্ঞ | ভৃত্য | শক্তি | অল্প | বহু | মুক্তি |
বর্ত্ন | পত্র | পুষ্প | মাতা | ভুবন | স্মৃতি |
তৎসম শব্দ মনে রাখার সহক টেকনিকঃ
পর্বত ও নদী অঞ্চলে সুন্দর বৃক্ষলতা ও পুষ্প পদ্যের গৃহ দেখা যায়, সেখানে তাপসী তরুণী ও মানব কন্যা বর্ষার রাত্রিকে নৌকায় চন্দ্রকে সাক্ষী রেখে নৃত্য করে এবং সকাল বিকাল চর্মকার স্বামী ও সম্রাট প্রখর সূর্যের নিচে তাদের জীবন মৃত গৃহিণীকে বৈষ্ণব সাজিয়ে ধর্ম কর্ম করে মুক্তি লাভের চেষ্টা করে ।
অর্ধ-তৎসম শব্দ কাকে বলেঃ বাংলা ভাষায় কিছু সংস্কৃত শব্দ সামান্য পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয়, এগুলোকে বলে অর্ধ-তৎসম শব্দ । অর্ধ-তৎসম শব্দ সংস্কৃত শব্দের বিকৃত রূপ ।
সংস্কৃত | অর্ধ-তৎসম | সংস্কৃত | অর্ধ-তৎসম | সংস্কৃত | অর্ধ-তৎসম |
কৃষ্ণ | কেষ্ট | গৃহিণী | গিন্নী, গিন্নি | সূর্য | সূর্য্যি |
চন্দ্র | চন্দর | নিমন্ত্রণ | নেমন্তন্ন | শ্রাদ্ধ | ছেরাদ্দ |
ক্ষুধা | খিদে | স্পর্শ | পরশ | বৈষ্ণব | বোষ্টম |
মহাশয় | মশায় | সত্য | সত্যি | জ্যোৎস্না | জোছনা |
বৃষ্টি | বিষ্টি | মর্ম | মরম | ধৈর্য | ধৈরজ |
পাত্র | পাত্তর | পুত্ৰ | পুত্তুর | যজ্ঞ | যজ্ঞি |
মহার্ঘ | মাগি | পুরোহিত | পুরুত | ভক্তি | ভকতি |
প্রীতি | পিরীতি | বিষ্ণু | বিষ্ট | প্ৰণাম | পেন্নাম |
তৃষ্ণা | তেষ্টা | বাদ্য | বাদ্যি | মিষ্ট | মিষ্টি |
গাত্র | গতর | কুৎসিত | কুচ্ছিত | যত্ন | যতন |
রত্ন | রতন | সমুদ্র | সমুদ্দুর | অদ্য | অজ্জ |
তদ্ভব শব্দ কাকে বলেঃ যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ । ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তদ্ভব শব্দকে ‘খাঁটি বাংলা’ বা ‘মৌলিক’ শব্দ বলেছেন । তদ্ভব শব্দকে ‘খাঁটি বাংলা’ শব্দ বলা হয় ।
সংস্কৃত | প্রাকৃত | তদ্ভব | সংস্কৃত | প্রাকৃত | তদ্ভব |
কৃষ্ণ | কণ্হ | কানু, কানাই | কার্য | কজজ | কাজ |
হস্ত | হথ | হাত | ভও | ভক্ত | ভাত |
পাদ | পাঅ | পা | মস্তক | মথঅ | মাথা |
কর্ণ | কন্ন | কান | সর্ব | সব্ব | সব |
সৰ্প | সপপ | সাপ | চন্দ্ৰ | চন্দ | চাঁদ |
সখী | সহী | সই | বধূ | বহু | বউ, বৌ |
মধু | মহু | মউ, মৌ | মাতা | মাআ | মা |
দক্ষিণ | দখিণ > দাহিণ | ডান | দ্বাদশ | দবাদস > বারস > বারহ | বারো |
গাত্র | গাও | গা | স্বরূপ | সরূআ | সরু |
পুত্র | পুত্ত | পো | অদ্য | অজ্ | আজ |
চর্মকার | চম্মআর | চামার | মৎস্য | মচ্ছ | মাছ |
অংশু | অংসু | আঁসু > আঁশ | শৃগাল | সিআল | শিয়াল |
নৃত্য | নচ্চ | নাচ | তৈল | তেল্ল | তেল |
শত | সঅ | শ | দুগ্ধ | দুগ্ধ | দুধ |
বংশী | বংসী | বাঁশি | অলক্ত | অলত্ত | আলতা |
চক্ষু | চক্খু | চোখ | শৃঙ্গ | সিংগ | শিং |
মশক | মসা | মশা | ব্যাঘ্র | বঘ | বাঘ |
দেশি শব্দ কাকে বলেঃ
বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীদের (যেমন : কোল, মুণ্ডা, দ্রাবিড়, অস্ট্রিক প্রভৃতি) ও সংস্কৃতির যেসব উপাদান বাংলায় রক্ষিত রয়েছে সেসব শব্দকে দেশি শব্দ বলা হয়। অনেক সময় দেশি শব্দের মূল নির্ধারণ করা যায় না; কিন্তু কোন ভাষা থেকে এসেছে তার হদিস মেলে ।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেশি শব্দের উদাহরণ
জীবজন্তু ও পশুপাখি | খেকশিয়াল, বাবুই, নেংটি, হাঁড়ি, হোল, হুতুম ইত্যাদি । |
গৃহস্থালী ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র | খালুই, চাড়ি, চিমটা, ঝাটা, ঢেঁকি, পাতিল, বাখারি, বাতা, বিচালি, সেঁউতি ইত্যাদি । |
মাছ | টেংরা, চেলা, পারশে, পোনা, বাটা, লেঠা, বিঠা, গজাল, কাতলা ইত্যাদি। |
ফলমূল ও খাদ্যদ্রব্য | কদু, উচ্ছে, ইচড়, জলপাই, জারুল, ফোঁপর, টেপারি, ধুন্দল, লাউ, থানকুনি, থোড়, নটে, আমানি, মালপো, বাতাসা, ধনিচা, নিসিন্দা, হোগলা ইত্যাদি । |
অন্যান্য শব্দ | কুড়ি, ট্যাঙ্গা, ডাব, ঝোল, ডোম, মুড়ি, বাদুড়, আলু, ডেলা, বড়শি, সড়কি, কোঁচ, ডুগি, টিকারা, দাবা, চিক, মাকরি, মল, আটি, আছাড়, আড্ডা, চাটাই, ছোকরা, ডালনা, ডিগবাজি, ডোবা, মাঠ, মটকা, ঠাট্টা, কচি, ঠাঁসা, ঠুটো, পোকা, কানা, বোঝা, সলো, মই, মাচা, যাতা, লাঠি, বোরা, বাখারি, পয়লা, পেট, পেটরা, ঝাউ, ঝাল, ঝিনুক ইত্যাদি । |
দেশি শব্দ মনে রাখারা টেকনিক
ডাগর ডাগর ছেলেরা নেড়া হয়ে চোঙ্গা টোপর মাথায় দিয়ে ডিঙ্গা নিয়ে গঞ্জে গেল । তারা কুড়ি টাকা দিয়ে ঢেঁকি, ডেলা, ডুগি, ডাব, দাবা, যাতা, মটকা, লাঠি, মই, কুলা কিনে বাড়ি ফিরল ।
বিদেশি শব্দ কাকে বলেঃ
যেসব শব্দ বিদেশি ভাষা থেকে বাংলায় প্রবেশ করেছে সেসব শব্দকে বিদেশি শব্দ বলে । অথবা, এক ভাষার শব্দ অন্য ভাষায় স্থান পেলে তাকে বিদেশি শব্দ বলে ।
আরবী শব্দ
ধর্মসংক্রান্ত শব্দ | আল্লাহ্, ইসলাম, ঈমান, ওজু, কোরবানি, কুরআন, কিয়ামত, গোসল, জান্নাত, জাহান্নাম, তওবা, তসবি, জাকাত, হজ্ব, হাদিস, হারাম, হালাল ইত্যাদি । |
প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক শব্দ | আদালত, আলেম, ইনসান, ঈদ, উকিল, ওজর, এজলাস, এলেম, কানুন, কলম, কিতাব, কেচ্ছা, খারিজ, গায়েব, দোয়াত, নগদ, বাকি, মহকুমা, মুন্সেফ, মোক্তার, রায় ইত্যাদি । |
আরবী শব্দ মনে রাখার টেকনিক
আলেমগণ ইসলামের আইন কানুন ও কোরআন হাদিস সম্পর্কে ইনকিলাবে ইশতেহার দিলেন । হারাম বর্জন করে হালাল পথে থেকে সঠিকভাবে ওযু গোসল করে এলেমের সাথে যাকাত হজ পালন করলে আলাহ ইনাম স্বরূপ কিয়ামতের দিন জাহান্নামের পরিবর্তে জান্নাত ইজারা দিবেন । যারা গরিবদেরকে বই, কিতাব, দোয়াত, কলম, তসবি দিয়ে সাহায্য করবে আলাহর আদালতের এজলাসে ইনসাফের রায়ে তাদের নগদ, বাকি সব গুনাহ খারিজ হয়ে যাবে। দালাল, ইহুদি, উকিল, উজির, মোক্তার, মুন্সেফ, শয়তানদের কবরে খবর হবে ।
ফারসি শব্দ কাকে বলে
ধর্মসংক্রান্ত শব্দ | খোদা, গুনাহ, দোজখ, নামাজ, পয়গম্বর, ফেরেশতা, বেহেশত, রোজা ইত্যাদি । |
প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক শব্দ | কারখানা, চশমা, জবানবন্দি, তারিখ, তোশক, দফতর, দরবার, দোকান, দস্তখত, দৌলত, নালিশ, বাদশাহ, বান্দা, মেথর, রসদ ইত্যাদি । |
বিবিধ শব্দ | আদমি, আমদানি, জানোয়ার, জিন্দা, নমুনা, বদমাশ, রফতানি, হাঙ্গামা ইত্যাদি । |
প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক শব্দ |
প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক ফরাসি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
কাগজ কারখানার কারিগর ওস্তাদ কাবুলি আফগান আঙুর বাগানে এক দরবারে তোশকের উপর বসে আরামের আমেজে একতারায় আওয়াজ তুললো । এ দিকে চশমার দোকানের গোয়েন্দা দৌলত মিয়া নিজ দস্তখত ও জবানবন্দি দিয়ে গালিচায় বসা বাদশা ও গোলাপ হাতে দাঁড়ানো জামদানি শাড়ি পরার কাছে নালিশ করলো । বাদশা তখন সিপাহি পেয়াদাকে ডেকে সমস্ত হিন্দু বন্দিদেরকে হুশিয়ার করে দিতে বললেন । কিন্তু উক্ত তারিখে এক মেথর রসদ চুরি করতে গিয়ে চাকরিচ্যুত হলো ।
ধর্ম সংক্রান্ত ফরাসি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
খোদা ফেরেশতার মাধ্যমে পয়গম্বরকে বলে দিলেন যারা নামাজ, রোজা করবে তাদের জন্য বেহেশত আর গুনাহ করলে দোযখ ।
বিবিধ ফরাসি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা করতে গিয়ে হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দিল বদমাশ আদমি ও জিন্দা জানোয়ারের দল ।
ইংরেজি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
ইউনিভার্সিটি, ইউনিয়ন, কলেজ, টিন, নভেল, নোট, পাউডার, পেন্সিল, ব্যাগ, ফুটবল, মাস্টার, লাইব্রেরি, স্কুল ইত্যাদি। আফিম (Opium), অফিস (Office), ইস্কুল (School), বাক্স (Box), হাসপাতাল ( Hospital), বোতল (Bottle) ইত্যাদি ।
পর্তুগিজ শব্দ
আনারস, আলপিন, পাউরুটি, চাবি, কফি, কাকাতুয়া, কেরানি, গীর্জা, গোলাপ, আলকাতরা, আলমারি, বোমা, বোতাম, বালতি, বন্দর, বাসন, নিলাম, লোনা, পেঁপে, পিস্তল, পেরেক, পেয়ারা, কামরাঙা, তোয়ালা, গুদাম, তামাক, মস্করা, পাচার, বাতাবি, সাবান, টুপি, ফিতা, আতা, গামলা, পাদরি, পিরিচ, পেরেক, বেহালা, ইংরেজ, বর্গা ইত্যাদি ।
পর্তুগিজ শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
এক পর্তুগিজ পাদ্রি মিস্ত্রি সেজে গলায় ক্রশ ঝুলিয়ে আলকাতরা, ইস্পাত পেরেক আলপিন দিয়ে কাজ করে সাবান দিয়ে গোসল করল এবং ইস্তিরি করা তোয়ালে দিয়ে গা মুছে শার্টের বোতাম লাগিয়ে পাউরুটি খেয়ে বালতির ভিতর আনারস, আতা, পেঁপে, পেয়ারা, কপি নিয়ে গির্জার গুদামে চাবি দিয়ে রাখলো । কিন্তু কেরানি আলমারি সরিয়ে মিস্ত্রি এনে তাকে পিস্তল ও বোমার ভয় দেখিয়ে কামরার জানালা ভেঙ্গে গির্জার মধ্যে প্রবেশ করল । বোমার শব্দ যাতে কানে না লাগে সেজন্য ফর্মা ফিরিঙ্গি ফিতা পরিহিত ফালতো লোক বেহালার সুর তুলে নৃত্য করতে লাগল ।
ফরাসি শব্দঃ
এলিট, কার্তুজ, কুপন, খোরাকি, ডিপো, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, বুর্জোয়া, মাদাম, ব্যালে, গ্যারেজ, মেনু, বুফে, পিজা, সেমিজ, বিস্কুট, আঁতাত, জাহাজ, আঁশ, ম্যাটিনি, রেনেসাঁ, দিনেমার, প্রোগ্রাম ইত্যাদি ।
ফরাসি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
ওলন্দাজ ও দিনেমারের বুর্জোয়া ছাত্ররা আঁতাত করে কার্তুজ নগরীর ডিপো ক্যাফে গ্যারেজ রেস্তোরাঁ সর্বত্র কুপন ছাড়লো ।
ওলন্দাজ শব্দঃ ইস্কাপন, টেককা, তুরুপ, রুইতন, হরতন ।
হিন্দি শব্দঃ
বার্তা, পুরি, পানি, টহল, বাচ্চা, চানাচুর, মিঠাই, কাহিনি, খানাপিনা, সাচ্চা, চাচা, চাচি, দাদা, নানা, লুচি ইত্যাদি ।
হিন্দি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
চামেলি মিঠাই খেয়ে কমলা রঙের জামা পরলে তাকে বাচ্চার মতো দেখাচ্ছিল । এমন সময় তরকারি ওয়ালা ছিনতাই করতে এলে চামেলি তাকে ডেরা করে পানিতে ফেলে দিলো । টহল পুলিশ বার্তা পেয়ে জলদি ধরতে এলে তাদের ফালতু বলে ঠাণ্ডা মেরে চাহিদা মত পুরি খাওয়ালো ।
গুজরাটি শব্দঃ খদ্দর, খাদি, হরতাল, জয়ন্তি, গরবা, চরকা ।
সিংহলি শব্দঃ সিডর, বেরিবেরি ।
পাঞ্জাবি শব্দঃ চাহিদা, শিখ, খালসা, গুরদুয়ার ।
ইতালিয়ান শব্দঃ সনেট, মাফিয়া, ম্যাজেন্টা ।
মেক্সিকান শব্দঃ চকোলেট
রুশ শব্দঃ কমরেড, স্পুটনিক ।
দ. আফ্রিকান শব্দঃ জেব্রা, জিরাফ ।
পেরুর শব্দঃ কুইনাইন
জার্মান শব্দঃ নাৎসি, কিন্ডারগার্টেন ।
তামিল শব্দঃ চুরুট
তুর্কি শব্দঃ
উজবুক, উর্দি, উর্দু, কঞ্চি, কাবু, কুর্নিশ, কুলি, কোর্মা, খাঁ, খান, চকমক, চিক, চোগা, চারু, ঝকমক, ঠাকুর, তমা, তোপ, দারোগা, তুর্ক, বাবা, বেগম, বাবুর্চি, মোগল, লাশ, সওগাত ইত্যাদি ।
তুর্কি শব্দ মনে রাখার টেকনিকঃ
মোগল খান বাহাদুরের লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । এক উর্দি পরা কোতকা | দারোগা কঞ্চি হাতে লাশ তালাশ করছিল । তালাশ করে সে খুজে পেল চাকু, কাঁচি, যা চকমক ঝকমক করছে । চিকের আড়ালে বাবুর্চি খাঁ সাহেবের খোকার | জন্য কোর্মা রান্না করছিল । দারোগা বাবুর্চিকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলল, আপনি আমার দাদা ঠাকুর, বাবা সওগাত আমি কিছুই জানি না । এখানে বাস করে চাকর, কুলিরা । আপনি তোপ দেন, তারা কাবু হয়ে সব বলে দিবে ।
চীনা শব্দঃ চা, চিনি, লিচু, এলাচি, তুফান, সাম্পান, লবি ইত্যাদি ।
জাপানি শব্দঃ রিকশা, হারিকিরি, প্যাগোডা, জুডো, হাসনাহেনা, সুনামি ইত্যাদি ।
গ্রিক শব্দঃ দাম, কোণ, কেন্দ্র, সুরঙ্গ ইত্যাদি ।
বর্মি শব্দঃ কিয়াং, লুঙ্গি, ফুঙ্গি, লামা, ঠোঙ্গা, প্যাগোডা ইত্যাদি ।
One comment
Pingback: পদ কাকে বলে কত প্রকার কী কী - Sopner BCS